বাংলাদেশে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর নবনিযুক্ত রিপ্রেজেন্টেটিভ (প্রতিনিধি) হিসেবে যোগ দিয়েছেন জনাবা সুম্বুল রিজভী। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব এ কে আবদুল মোমেন-এর কাছে তাঁর পরিচয়পত্র পেশ করার পর তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাংলাদেশে যোগদানের আগে সুম্বুল রিজভী সফলভাবে কাজ করেছেন জেনেভায় ইউএনএইচসিআর-এর প্রধান কার্যালয়ে আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি বিষয়ক মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে।
বাংলাদেশের সাথে ইউএনএইচসিআর-এর সম্পর্ক ১৯৭১ সাল থেকে, আর জনাবা সুম্বুল রিজভী হলেন বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর নিয়োগপ্রাপ্ত দ্বাদশ প্রতিনিধি। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার জনাব ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির পক্ষ থেকে নিযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হিসেবে সরকার, মানবিক সংস্থা, সুশীল সমাজ ও শরণার্থীদের সাথে কাজ করবেন। তিনি ২০১৮ সালে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একজন সমন্বয়ক হিসেবে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সকল মানবিক সংস্থার সমন্বিত সহায়তা কার্যক্রমের সূচনা করেছিলেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর জনাবা সুম্বুল রিজভী বলেন, “বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর-এর রিপ্রেজেন্টেটিভ হতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি; উদার মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাংলাদেশ প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা প্রদান ও তাদের সমস্যা সমাধানে আবার যুক্ত হতে পেরেও আমি উৎসাহী বোধ করছি। বাংলাদেশ সরকার, আমাদের মানবিক কার্যক্রমের অংশীদার সংস্থা ও সুশীল সমাজের সাথে আমাদের সম্পর্ককে আমি আরও সুদৃঢ় করতে চাই, যেন রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়”।
আগামী কয়েক সপ্তাহে জনাবা সুম্বুল রিজভী সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ, মানবিক কার্যক্রমের অংশীদার সংস্থার প্রতিনিধি, শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারী স্থানীয় জনগণের সাথে দেখা করবেন। তাঁর পুরো কর্ম জীবনে জনাবা সুম্বুল রিজভী সংকট, দুর্যোগের প্রস্তুতি, মানবিক সহায়তা ও সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন জাতীয় ও স্থানীয় অংশীদারদের সাথে এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের সাথে।
ভারতীয় নাগরিক জনাবা সুম্বুল রিজভী ৩৫ বছরেরও বেশী সময়ের কর্ম জীবনে কাজ করেছেন মানবাধিকার ও মানবিক সহায়তা নিয়ে; কাজ করেছেন ভারতীয় আদালতে লিটিগেটিং কাউন্সেল (মামলা বিষয়ক পরামর্শদাতা) হিসেবে, এনজিও উপদেষ্টা হিসেবে এবং জাতিসংঘের সাথে। তিনি ইউএনএইচসিআর-এর নানাবিধ ক্ষেত্রে কাজ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ইরাক, আফগানিস্তান ও সুদানের দারফুর। সিরিয়া ও কিরঘিজিস্থানের সংকটের প্রথম দিকে তিনি জরুরী সহায়তা ও সমন্বিত মানবিক কার্যক্রমের অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এছাড়াও জনাবা রিজভী কাজ করেছেন ভূমধ্যসাগর সংকটের সময় ইউএনএইচসিআর-এর আশ্রয় ও অভিবাসন সংক্রান্ত পলিসি এডভাইজর হিসেবে, এবং গ্লোবাল মাইগ্রেশন ফোরাম ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে।
পাঠকের মতামত